দেবীদের আঁছড়

বিষাদ সাগরে ভেসে যেতে যেতেই হঠাৎ করে দেখা মিললো নীরা নাম্নী এক দেবীরদেবীর দুচোখে আগুন। ধ্বংসের আগুন। তার এক হাতে অন্ধকারাচ্ছন্ন তীরের ফলায় হেমলকের বিষে বিষাক্ত হয়ে আছে সমস্ত পূজারীর শরীর। অন্য হাতে তার প্রথম প্রেমিকের বুক থেকে ছিড়ে আনা হৃৎপিণ্ড থেকে টপটপ করে তাজা রক্ত ঝরে তৈরি হয়েছে লোহিত সাগর।

কিন্তু দেবীর মুখে হাসি। লম্বাটে চিবুক, হালকা টোল পড়া গাল, উপরের ঠোঁটের বাঁদিকের কোণে ছোট্ট একটা তিলে সে হাসি বিস্তৃত হয়েছে ভূপৃষ্ঠ জুড়ে। সে হাসিতে আলো বেরোচ্ছে ঠিকরে ঠিকরে। আর সেই আলো সুন্দরের পূজারী সমস্ত পূজারীকেই চৌম্বকীয় আকর্ষণে টেনে আনছে দেবীর পদতলে।

দেবীরা কি এমনই হয়?
অতীতের খাতায় টুকে রাখা বৈপরীত্যের তিক্ত অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে সাবধানতা বাণী বেরোতেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু হায়! আমার চারদিকে শৈত্যপ্রবাহ চলছে আর সবটুকু উষ্ণতা দেবীর চারপাশ ঘিরে। ঠাণ্ডায় জমতে জমতে যখন আর বেঁচে থাকতে পারছিলাম না তখনই নিজেকে সঁপে দিতে হলো দেবীর হস্তে।

এরপরে?
বেঁচে আছি। একটু উষ্ণতা পেয়ে যখনই সম্বিত ফিরলো নিজের চোখদুটো উপড়ে নিলাম কোটর থেকে যাতে দেবীর হাসির কারণে সৃষ্ট মোহিনী রূপের আলো আমার মণিকোঠায় এসে না পড়ে। অন্ধ এ জীবন সবদিকেই ঠিকঠাক চলছে শুধু ফুঁপিয়ে উঠি যখন হাতড়ে বেড়াতে হয় দ্বিতীয় পদক্ষেপটা। কোন দেবীর আঁছড় থেকে নিজেকে বাঁচাতে পেরে সে অশ্রুজলও সার্থক মনে হয়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তর্ক বিতর্ক

ফুলশয্যা

“শোকীয় ভ্রমণ”