তর্ক বিতর্ক
আমি কখনো তর্কে জড়াই
না।
কারণ তর্কের একটা
পর্যায়ে আমার নিজের ওপরে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। অতি পরিচিত আর পরিচিত ব্যতীত কারো
সাথে তো কখনোই নয়। কারণ সেক্ষেত্রে বিপদটা উভমূখী হতে পারে। তার নিজের জন্যেও আর
আমার জন্যেও।
যদিও দেখতে ছোটখাটো
হবার কারণে অপরিচিতরা কেমন যেন গায়ে পড়েই আমার সাথে ঝগড়া করতে আসে। আমার চেহারার ভেতরে যে
একটু বখাটে বখাটে ভাব আছে সেটা প্রমাণিত। তাই অপরিচিতদের ক্ষেত্রে আমি চুপ করে শুধু শুনি। আর
বিশেষ ক্ষেত্রে একদৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকি। যেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজে দেয়। ভয়, বিতৃষ্ণা কিংবা রাগান্বিত
করার অপারগতায় সে নিজেকে গুটিয়ে নেয়। আর আমি মনে মনে কোন একটা গানের গীতকবিতা মনে
করার চেষ্টা করি। এটা ওই লোকের করা অপমানের কথা খুব দ্রুত ভুলিয়ে দেয়। যদিও
অপরিচিত ব্যক্তির চেহারা আমি কখনোই ভুলি না। এতদিন পর্যন্ত যতজন আমার সাথে খারাপ
ব্যবহার করেছে তাদের প্রত্যেককেই আমি এখনো মনে রেখেছি। অনেকে তার ব্যবহারের কারণেই
আমার সাথে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
তবে হ্যাঁ, পরিচিতদের কেউ কিছু
বললে সেটার পরিণতি খুব একটা সুখকর হবার সম্ভাবনা কম থাকে। কারণ যাকে আমি এতদিন ধরে
চিনলাম সে আমাকে এভাবে অপমান করল, এই ব্যাপারটা ভুলতে
আমার খুবই কষ্ট হয়। ফলস্বরূপ, তাকে শাস্তি দেয়ার প্লান
করি আমি। বিভিন্ন রকমের শাস্তি। যেমন-
**
সে আমার সামনে বসে আছে।
আমি আমার হেডফোনের তারটা তার গলায় পেঁচিয়ে ধরে রাখতে পারি। Samsung এর হেডফোন
যথেষ্ট ভাল ও মজবুত হওয়ায় আনুমানিক দেড় মিনিটে তার ব্লাড সার্কুলেশন বন্ধ হয়ে
যাবে। সে অচেতন হয়ে যাবে। চেপে ধরাটা তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট পর্যন্ত গড়ালে হয়ত মরেই
যাবে সে, Who cares!
**
কিংবা আমার সাথে ঝগড়ার পরে
সে নিশ্চিন্তে তার দৈনন্দিন রুটিন অনুযায়ী দিন পার করছে। কোন একটি সুন্দর দিন শেষ
করে সে রুমে গিয়ে শুয়ে পরল। আমি রাতে গিয়ে তার রুমের দরজায় বাহির থেকে তালা লাগিয়ে
পেট্রোল ঢেলে রুমে আগুন লাগিয়ে দিলাম।
**
অথবা, অন্ধকার রাতে একা
একা কোন এক নির্জন রাস্তায় চলাচল করছে সে। আমি তার পেছন থেকে এসে কাঁধে টোকা
দিলাম। সে আমার দিকে ফিরতেই আমার হাতে রাখা খুরের আঘাতে তার গলা দু-ফাঁক হয়ে গেল।
বড়জোর তিরিশ সেকেন্ড পরে তার আর পৃথিবীর অক্সিজেন খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
**
এটাও হতে পারে যে আমার
হাতে রাখা টুথপিকটা তার Apple
of Adam এ প্রবেশ করিয়ে দিলাম একটা জোর চাপড়ে। Asphyxiate হতে তার সময় লাগবে ষাট থেকে নব্বুই সেকেন্ড।
এগুলো তো গেল আমার নিজের
এ্যাকশন অব রেট্রিবিউশান। পরোক্ষ হাজারটা উপায়ে আমি তার ক্ষতি করতে পারি। কিছুটা
সময় আর দুষ্টবুদ্ধি খাটালেই সেগুলো বের করা যায়। গার্লফ্রেন্ডের সামনে অপদস্থ করা,
চোর সাব্যস্ত করা, বাবা মায়ের কাছে তার আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে দেয়া প্রভৃতি খুবই
সাধারণ কাজ। অল্প সময়ের জন্যে ঝামেলা পাকাতে এগুলো ব্যবহার করতে পারি।
জঙ্গিবাদ সেনসিটিভ এ দেশে
পুলিশ বা র্যাবের মাধ্যমে খুব স্বাভাবিক ভাবেই কাউকে বিশাল ধরনের বাঁশ দেয়া যায়।
আর যদি তিনি হন সেরকম সেনসিটিভ কোন ডিপার্টমেন্টের, তা হলে তো জমে ক্ষীর।
সাজিয়ে-গুছিয়ে একটা গল্প লিখে মেইলবক্সে রেখে দিলেই হবে। আর গল্প লেখার ব্যাপারে
আমার পূর্বাভিজ্ঞতা তো রয়েছেই। মোটামুটি সাজাতে পারলেই, ব্যাস! কয়েকটা মাস আর
ক্লাস, রিলেশন, র্যাগিং কিছুতেই হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। একজনের ওপর ডমিনেট করতে
গিয়ে জীবন থেকে বেশ খানিকটা সময় সাথে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় হলে সেটা নিশ্চয়ই সুখকর
হবেনা।
আর আমার অতি পরিচিত বা
কাছের মানুষ যারা আছে তারা আমাকে কিছু বলে না। কখনোই বলে না। কারণ তারা আমার উপরোক্ত ক্ষমতাগুলো সম্পর্কে ইতোপূর্বে অবহিত হয়ে গেছে। কিছু
করি বা না করি, করতে পারি এটা জেনে রাখাটা বেটার।
“Life is full of surprises.”
তো মোদ্দাকথা হল, বেশি
বেশি পানি খাবেন। রাজশাহীতে পানির স্বল্পতা থাকার কারণে মানুষের মাথা গরম থাকে। আর
আমার মাথা এত গরম থাকে যে উকুন পর্যন্ত আমার মাথায় বাসা বাঁধতে পারে না। মাথা
ঠাণ্ডা রাখার জন্যে আমি গ্যালনভর্তি করে পানি খাই।
তর্কে না জড়িয়ে পানি খান,
সুস্থ থাকুন, বেঁচে থাকুন।
Just kidding…
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন