#কোম্পানির_প্রচারের_জন্য

ছায়া ঢাকা ঝাউ গাছের নিচে গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে পিচ উঠে যাওয়া খানাখন্দে ভরা রাস্তায় একটু দুরত্ব রেখেই হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ জিজ্ঞেস করে বসলে, 'তা কি মনে করে এতদিন পরে দেখা করতে এলে? ভালই তো ছিলাম আমি।'

জানি সে ভাল ছিল। ভাল থাকার সুপ্ত সূত্র দুবছরে শিখিয়ে দিয়েছিলাম খুব ভাল করেই। ভাল না থাকলেও ভাল আছির অভিনয় করা, কান্না আসলে হুড়মুড় করে কমলাকান্ত পড়তে বসা, কেউ বকা দিলে মীরাক্কেলের কৌতুক দেখা ইত্যাদি নানান সূত্রে ভরা ছিল আমাদের দুবছর। এমনকি বঙ্কিমের ঐ বইটাও আমিই কিনে দিয়েছিলাম। যাতে একটু ভাল থাকতে পারে সে।

এতগুলো বিকল্প দিলে যে কেউই ভাল থাকতে পারে। যদি সে ব্যবহার করতে পারে আরকি। কিন্তু একান্ত খারাপ হওয়ার জন্য প্রাক্তনের সাথে একবার দেখা হওয়াটাই যথেষ্ট। এক পলকের দেখা হওয়া মানেই পেছনের শত-সহস্র দিনের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে আসবে আইম্যাক্সে দেখানো চলচ্চিত্রের মত।

তারপর?
তারপর ভাল থাকার জন্য এপাশ ওপাশ করতে করতে, নির্ঘুম রাত কাটাতে কাটাতে শেষপর্যন্ত বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাবে। কয়েকটা বছর আলসেমিতে কেটে যাবে কোন কারণ ছাড়াই। ঐ বছরগুলোয় কোন উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে না জীবনের। পোড়া কপালে যদি কোন একটা পরীক্ষার তারিখই থেকে থাকে তবে সেটায় অকৃতকার্য হওয়া ঠেকানোর সাধ্য স্বয়ং বোর্ড ডিরেক্টরেরও নেই।

আর তারপরই ঘোরটা কেটে যাবে পুরনো ঐ পদ্ধতির প্রয়োগে। তখন কেউ কেউ সামনে এগিয়ে যেতে পারে বৈকি তবে অনেকেই ভাঙা দেয়ালে কপাল ঠুকতে গিয়ে দেয়ালের বারোটা বাজিয়ে ছাড়ে।

দামী দেয়াল কিংবা তারচে কিছুটা নিম্নমানের কপাল রক্ষার জন্যই দেখাটেখা না করাই ভাল। এতে শরীরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে পাশাপাশি মেস কিংবা হলের অবকাঠামো ধ্বংসের হাত থেকে বেঁচে যায়।

তাই যখন দেখাটা করেই ফেললাম এবং সে দেখা করার কারণটা জিজ্ঞেস করেও বসল তখন একটু ভেবে এই উত্তর দিলাম- 'তিনশ টাকার এনার্জি লাইট এখন পাচ্ছেন মাত্র একশ টাকায়। শুধুমাত্র কোম্পানির প্রচারের জন্য।'

#মুয়াজ #মুয়াজ_হোসেন #রম্য #দেখা

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

তর্ক বিতর্ক

মাঝরাত, মুয়াজ হোসেন

কান্না ঢাকা বৃষ্টি